ঢাকা লিগের শুরু থেকে দুর্দান্ত পারফর্ম করা এনামুল হক বিজয় শেষ রাউন্ডে পেলেন গোল্ডেন ডাক! আবাহনীর বিপক্ষে প্রথম মুখোমুখিতে ‘ফ্লপ ‘প্রাইম ব্যাংকের ওপেনার।
তবুও লিগের রাউন্ড রবিন লিগে এনামুল যা করেছেন তা স্রেফ অবিশ্বাস্য, চোখ ধাঁধিয়ে দেয়ার মতো। ১০ ম্যাচে ৭২.৮০ গড়ে, ৯৭.৯৮ স্ট্রাইক রেটে এনামুলের রান ৭২৮। পিঠাপিঠি অবস্থায় থাকা নাঈম ইসলাম যেন যারপরনাই খুশি এনামুলে শেষ রাউন্ডের পারফরম্যান্সে! লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের এই ব্যাটসম্যান দশম রাউন্ডে ছাড়িয়ে গেছেন এনামুলকে। সমান ম্যাচে নাঈমের রান ৭৪৯। ব্যাটিং গড় ৮৩.২২, স্ট্রাইক রেট ৭৮.৬৭।
দুই ব্যাটসম্যানেরই ২টি করে সেঞ্চুরি, ৫টি করে ফিফটি। চারের সংখ্যায় তারা খুব কাছাকাছি। নাঈমের ৫৮ চারের বিপরীতে এনামুলের চার ৬২টি। তবে ছক্কায় এনামুল এগিয়ে প্রায় তিনগুণ। তার ৩২ ছক্কার বিপরীতে নাঈমের ছক্কা ১২টি। দুজনের স্ট্রাইক রেটের পার্থক্য গড়ে দিয়েছে এই ছক্কা সংখ্যাতেই।
তবে দুজনের ভূমিকা দুজনের। শুরুর থেকে দ্রুত রান তোলার দায়িত্ব এনামুলের। নাঈমের কাজ ইনিংস মেরামত। দুজনের জায়গায় দুজন পুরোপুরি সফল। নিজ নিজ দলকে তুলেছেন সুপার লিগে। সামনে আরও পাঁচ ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবেন দুজনই। তাই, ক্রিকেটাঙ্গনে আলোচনা কোথায় থামবেন নাঈম ও এনামুল?
লিগের দুজনেরই সামনেই ইতিহাস গড়ার হাতছানি। প্রিমিয়ার লিগ লিস্ট এ মর্যাদা পাওয়ার পর এক আসরে সবচেয়ে বেশি রান করেছেন প্রাইম দোলেশ্বরের সাইফ হাসান। ২০১৮-১৯ মৌসুমে ১৬ ম্যাচে তার রান ছিল ৮১৪। সাত’শ এর বেশি রান করা নাঈম ও এনামুল জন্য তাকে ছাড়িয়ে যাওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র।
কাজটা কঠিন নয়। তবে সেদিকে মনোযোগ নেই দুজনেরই। লিগের বর্তমান অবস্থায় দাঁড়িয়ে নিজেদের ব্যক্তিগত রানের থেকে দলের শিরোপার কথাই বেশি ভাবছেন তারা।
‘প্রথম পর্ব (রাউন্ড রবিন লিগ) ভালো গেছে। সামনে আরও কঠিন চ্যালেঞ্জ। টপ ছয়টা দল উঠেছে। সবার সুযোগ আছে শিরোপা জেতার। চেষ্টা করবো নিজে রান করার। সঙ্গে দলকেও চ্যাম্পিয়ন করার। আসলে নিজের রান, রেকর্ড করেও লাভ হবে না, যদি দল চ্যাম্পিয়ন না হয়। এখন আসলে চ্যাম্পিয়ন হওয়া নিয়েই ভাবছি।’ –বলছিলেন এনামুল।
রূপগঞ্জের ব্যাটিংয়ের সবচেয়ে বড় ভরসা নাঈম ইসলাম। তার কণ্ঠেও ছিল একই সুর, ‘আমরা গতবার রানার্সআপ হয়েছিলাম। এবার চ্যাম্পিয়ন হতে চাই। সেই সুযোগটি আমাদের আছে। ব্যাটিং ভালো হয়েছে। এখন পর্যন্ত শীর্ষে আছি তাতে বলে দেয় ছন্দে আছি। এই ছন্দ সুপার লিগেও ধরে রাখতে হবে।’
দুজনের কাছেই প্রশ্ন করা হয়েছিল, লিগে কোথায় গিয়ে থামবেন তারা, কত রান পেলে মিটবে ক্ষুধা? নাঈমের কাছে সংখ্যাটা খুব একটা বড় বিষয় নয়, ‘কত রান করতে চাই এটা কখনো ভাবিনি। আমি এমন কিছু করতে পারি সেই বিশ্বাসটা আমার ছিল। লিগে শেষ দুই তিন বছর ধরেই ধারাবাহিক। এবারও নিজের রান চূঁড়ায় রেখে যেতে চাই।’
এনামুল এমন কিছু করতে চান যা আগে করেনি কেউ, ‘আমি ভালো খেলছি। এই আনন্দটা নিয়ে শেষ কয়েক ম্যাচ খেলতে চাই। অবশ্যই এমন কিছু করতে চাই যা আগে কেউ করেনি। মানে রেকর্ড-টেকর্ড কিছু করতে চাই। সব সময় ভালো খেলতে থাকলেও এমন সুযোগ আসে না। যেহেতু এবার ভালো খেলছি অবশ্যই চাইবো নিজেকে আরও মেলে ধরতে। সর্বোচ্চ রান স্কোরার হয়েই যেন লিগ শেষ করতে পারি।’
ধ্রুপদী ব্যাটিংয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটের প্রতি নিজেদের নিবেদন দেখিয়ে যাচ্ছেন নাঈম, এনামুল। তাদের পর আছেন জাকির হাসান (৪৮৭), মোসাদ্দেক হোসেন (৪৭৭), অমিত হাসান (৪৬৫) । ২২ গজে তাদের প্রতিযোগিতা লিগের মান আরও উচুঁতে নিয়ে গেছে বলার অপেক্ষা রাখে না। শীর্ষে থাকা নাঈম ও এনামুল কোথায় গিয়ে থামেন সেটাই দেখার।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।